2024-11-16 | পশ্চিমবঙ্গ | Kaliachak Sangbad | Views : 317
জয়নগর:-নদীয়া শান্তিপুরের পাশাপাশি বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে সারম্ভড়ে পালন করা হয় রাস উৎসব। বাংলার বিভিন্ন জায়গায় রাস উৎসবের সুখ্যাতি রয়েছে জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তেমনি জয়নগর উওরপাড়া সরকার বাড়ির রাস উৎসবের সুখ্যাতি অর্জন করেছে এক পৃথক কারণে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর এলাকার সরকার বাড়ির রাস উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ডাক্তার নীলরতন সরকারের নাম। আজ থেকে প্রায় আনুমানিক ২০০ বছর আগে জয়নগর উওরপাড়ার সরকার বাড়িতে জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা হতো দূর্গা উৎসব। দুর্গোৎসবের পাশাপাশি জয়নগর এলাকার সরকার বাড়ির পরিবারের সদস্যরা উৎসবের আমেজকে ধরে রাখতে পালন করতো রাস উৎসব। জয়নগরে এই সরকার বাড়ির রাস উৎসব অতীতের জৌলুস হারিয়েছে কিন্তু প্রাচীন প্রথা মেনে এখনো পালন করা হয় জয়নগর সরকার বাড়িতে রাস উৎসব।শুক্রবার রাস পূর্ণিমার পুন্য লগ্নে রাস উৎসবের মাতবে গোটা বাংলার গোটা বাংলার পাশাপাশি জয়নগরের সরকার বাড়িতেও সাড়ম্বরে পালন করা হবে রাস উৎসব। কথিত রয়েছে, আজ থেকে আনুমানিক প্রায় ২০০ বছর আগে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগর এলাকায় স্বর্গীয় গোপাল চন্দ্র সরকারের হাত ধরে জয়নগরের সরকার বাড়িতে রাস উৎসবের শুভ সূচনা করা হয়। প্রাচীন প্রথা মেনেই প্রায় ২০০ বছর ধরে চলে আসছে সেই রাস উৎসব। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নেতড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন ডঃ নীলরতন সরকার। তৎকালীন সময়ে পড়াশোনা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু জয়নগরে মামার বাড়িতে থেকেই চালিয়ে যেত ড: নীলরতন সরকার।এই মামার বাড়ি থেকেই সে বহড়ু হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছিল। কর্মজীবনে বেশিরভাগ অংশই জয়নগর কেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছিল ডক্টর নীলরতন সরকারের। প্রতিবছর রাস উৎসবে জয়নগরের এই সরকার বাড়িতে ছুটে আসতেন ডক্টর নীলরতন সরকার। তৎকালীন সময়ে জাঁকজমকের সঙ্গে পালন করা হতো সরকার বাড়িতে এই রাস উৎসব। এ বিষয়ে সরকার বাড়ির বর্তমান সদস্য শৈলেন্দ্রনাথ সরকার জানান,এই রাস পুজো হয় গোপাল জিউর,রাধা ও বিষ্ণুর মূর্তিকে সামনে রেখে আগের মতন জৌলুস আর নেই এই সরকার বাড়ির রাস উৎসবে। আগে এলাকার বহু মানুষ এই রাস উৎসব চালানোর জন্য এগিয়ে আসতো কিন্তু এখন আর এলাকার মানুষ এই রাস উৎসব নিয়ে আগ্রহ দেখায় না।আগে এক সপ্তাহ ধরে মেলা বসতো।পুতুল নাচ,যাত্রা,বাউল,কীর্তনের অনুষ্ঠানে আশে পাশের এলাকা থেকে বহু মানুষ উপস্থিত হতো।পূর্ণদাস বাউলের মতন শিল্পী এখানে এসে অনুষ্ঠান করে গেছে।এখানকার রাসে একশোর ওপর মাটির সঙ তৈরি করা হয়।এখন চারদিন ধরে চলে এই উৎসব।আগে জয়নগর মিত্রগঞ্জ বাজারের সবজি,মাছের বাজার বসতো এখানে এক সপ্তাহ ধরে। এখনকার তা বসে না। অতীতের সেই জৌলুস হারিয়ে গিয়েছে। এখন যথ সামান্য সঞ্চয়ের মধ্যে দিয়ে এই রাস উৎসবকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বর্তমান বংশধরেরা।তাঁরা চায় এলাকার মানুষ এগিয়ে আসুক এই উৎসবে আরো বেশি করে। আনন্দের সঙ্গে কেটে যায় রাস উৎসবের কয়েকটা দিন। অতীতের সেই ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে উওরপাড়ার সরকার বাড়ির সদস্যরা।আর এই সরকার বাড়ির পাশে ঘোষ বাড়ির রাস ও আগে জমজমাট হতো। এখন শুধু ইতিহাস টেনে নিয়ে চলেছে এই বাড়ির বংশধরেরা। ১২০০ বঙ্গান্দে কৃপারাম ঘোষের পুত্র রামজয় ঘোষ স্বপ্নাদেশ পেয়ে নন্দ নন্দন মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। আজও সেই মূর্তিতে রাস যাত্রা হয়ে আসছে।