2024-11-12 | মালদা,পশ্চিমবঙ্গ,মিশন সংবাদ, | Kaliachak Sangbad | Views : 441
নাজমুস সাহাদাত, কালিয়াচক: মালদা জেলার শিক্ষার হাব কালিয়াচক। এই কালিয়াচকে বহু উন্নতমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিড়ে আরো এক মনুষ্য জাতির মূল মন্ত্রে শিক্ষার্থীদের দীক্ষিত করতে এবং বর্তমান বিশৃংখল সমাজে সঠিক পথ দেখাতে কালিয়াচকের সাহাবাজপুর মাস্টারপাড়ায় গড়ে উঠেছে বিকাশ মিশন। এই বিকাশ মিশন এক দশক পেরিয়ে এক শিক্ষার জলন্ত প্রদীপ হিসেবে নিজেদের প্রচেষ্টাতে কোনরুপ শৈথিল্য করেনি তার প্রমাণ বিগত বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলে রাজ্যে দশম স্থান অধিকার ধ্রুবজ্যোতি মন্ডলের (২০২৪) ও ফাইজ মাসুদের (২০২২)। এছাড়াও তামান্না নুরজাহান (২০২৩) মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৪, শিরিন পারভীন (২০২০) সালের মাধ্যমিকে প্রাপ্ত ৬৭৯ নম্বর। এই বিকাশ মিশনের বিশেষত্ব অর্থাৎ ছাত্র-ছাত্রীদের যেভাবে পঠন-পাঠন দেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের পুঁথিগত শিক্ষাদানের পাশাপাশি নৈতিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাদান, জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সকল শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে পড়াশোনার ব্যবস্থা, দুস্থ ও মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, প্রতিটি শিক্ষাবর্ষে তিনটি পার্বিক দুটি ডেভেলপমেন্ট টেস্ট ও সাপ্তাহিক টেস্ট এবং সারপ্রাইজ টেস্টের ব্যবস্থা, প্রতিটি পার্বিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের বাছাই করে তাদের মেধার ভিত্তিতে রবিবার করে রেমিডিয়াল ক্লাসের ব্যবস্থা, দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত চারটি পরীক্ষা স্পেশাল এভালুয়েশন, সাইন্স এভালুয়েশন, শর্ট ইনহান্সমেন্ট, স্টার এলিজিবিলিটি টেস্ট নেওয়া হয়। এছাড়াও রয়েছে সম্পূর্ণ নতুনরূপে পূর্ণাঙ্গ স্মার্ট ক্লাসরুমের ব্যবস্থা, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শিক্ষাদান, ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল প্রভৃতি খেলাধুলা ও শরীরচর্চার জন্য নিজস্ব মিশনের খেলার মাঠ রয়েছে। প্রতিযোগিতা মুখী সাপ্তাহিক মিসলেনিয়াস ক্লাস, মানসিক বৃদ্ধি ও সাধারণ জ্ঞান অর্জনের জন্য একবার শিক্ষামূলক ভ্রমণ, মিশনের ছাত্র-ছাত্রীদের পৃথক আবাস, অনাবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য গাড়ি, প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা, সম্ভাবনাময় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি বিশেষ যত্ন ও ২৪ ঘন্টা সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারিতে ছাত্রীদের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এবং বিশেষ করে ছাত্রীদের মানসিক দিক-দৃঢ় অপূর্ণতা অর্জনের জন্য প্রতিটি পালনীয় সসম্মানে উৎসবের আমাজে পালন করা হয়। প্রতিবছর বিকাশ দর্পণ নামে ম্যাগাজিন যেখানে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের বাংলা ও ইংরেজি কবিতা, গল্প ও সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার ছাপানো হয়। বিকাশ মিশনের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জুলফিকার আলী, সম্পাদক আতিকুর রহমান, সভাপতি সাফিউর রহমান আনসারি, পরিচালক সাদেক আলী, সহ প্রধান শিক্ষক রাইসুদ্দিন আহমেদ, সদস্য মোঃ হাফিজুদ্দিন, আসাদুল হক ও মুকাদ্দার সেখ সহ সকল শিক্ষক শিক্ষিকাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও সকলের সহযোগিতায় এই বিকাশ মিশনের সফলতা। মিশনের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী বলেন, আমরা ২০১২ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির কাজ ও অনেক গুণীজনদের সাহায্য সহযোগিতায় কিছু সংখ্যক ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শুরু হয় পঠন পাঠন। শুরু হয় কর্তৃপক্ষের প্রতিটি সদস্যদের রাতদিন অক্লান্ত পরিশ্রম। তবে আজ ২০২৪ শে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছে আমাদের এই সেই পরিশ্রম বিফলে যায়নি। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতি বছর সফলতার শিখরে পৌঁছাচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বোর্ডে এক থেকে দশের মধ্যে বেশ কয়েকবার দখল করেছে। আমাদের এই মিশন থেকে পড়াশোনা করে যাওয়া অনেক ছাত্র-ছাত্রী এখন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার। খুব ভালো লাগে এবং মনটা আনন্দে ভরে ওঠে যখন আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের এইসব সফলতার খবর শুনি। তবে এই সফলতা কারও একার পরিশ্রমে গড়ে ওঠেনি। এর পেছনে রয়েছে কর্তৃপক্ষ শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এবং বিভিন্নভাবে মিশনের কাজের সঙ্গে জড়িত এখন মানুষের পরিশ্রম ও ভালোবাসা। আজ যেমন বিকাশ মিশনের পরিচিতি দূর দূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। মালদা তথা উত্তরবঙ্গ ও মধ্য বঙ্গে এই মিশনের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে এবং আমাদের বিশ্বাস আগামী দিনে বিকাশ মিশনের সুনাম পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়বে।